লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ ইঞ্জিন কাকে বলে?
উত্তরঃ ইঞ্জিন বলতে মূলত স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রকে বোঝায়।
যা জ্বালানী দহনের মাধ্যমে তাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজে চলে এবং যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে অন্যান্য যন্ত্রাদি কে চালায়।

প্রশ্নঃ মোটরযানের ইঞ্জিন কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ মোটরযানের ইঞ্জিন প্রধানত দুই প্রকার। (ব্যবহৃত জ্বালানির ভিত্তিতে)
১। পেট্রোল ইঞ্জিন
২। ডিজেল ইঞ্জিন

প্রশ্নঃ ইঞ্জিনের প্রধান প্রধান কয়েকটি যন্ত্রাংশের নাম লিখ।
উত্তরঃ
১। সিলিন্ডার
২। পিস্টন
৩। ক্র্যাংকশ্যাফট
৪। ক্যাম শ্যাফট
৫। কানেকটিং রড
৬। ফ্লাই হুইল
৭। সিলিন্ডার হেড
৮। ইঞ্জিন ব্লক


প্রশ্নঃ কার্বুরেটরে কয়টি ভাল্ব থাকে? 
উত্তরঃ কার্বুরেটরে প্রধানত দুটি ভালভ থাকে।
যথাঃ-
১। থ্রটল ভালভ
২। চোক ভালভ

প্রশ্নঃ ফুয়েল সিস্টেমের কাজ কি? 
উত্তরঃ ফুয়েল ট্যাংক হতে ফুয়েল বা জ্বালানি সংগ্রহ করে তা আনুপাতিক হারে বাতাসের সাথে মিশে দহন উপযোগী করে ইঞ্জিন সিলিন্ডারে পৌঁছে দেওয়াই ফুয়েল সিস্টেমের কাজ।

প্রশ্নঃ পেট্রোল ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেমের কি কি অংশ নিয়ে গঠিত?
উত্তরঃ 
১। ফুয়েল ট্যাংক
২। ফুয়েল লাইন
৩। ফুয়েল ফিল্টার
৪। ফুয়েল পাম্প বা এসি পাম্প

প্রশ্নঃ গাড়ি রাস্তায় চলার সময় হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে প্রথমে কি চেক করতে হবে? 
উত্তরঃ ইঞ্জিন ধাক্কা দিয়ে বন্ধ হয়ে গেলে ফুয়েল লাইন চেক করতে হবে।

প্রশ্নঃ কি কি লক্ষণ দেখা দিলে ইঞ্জিন "ওভার হলিং" করার প্রয়োজন হয়?
উত্তরঃ
১. ইঞ্জিনে জ্বালানি বা লুব অয়েল বেশি খরচ হলে।
২. ইঞ্জিন হতে অত্যধিক কালো ধোঁয়া নির্গত হলে।
৩. মালামাল বহন করার ক্ষমতা কমে গেলে।
৪. উঁচু রাস্তায় উঠার সময় ইঞ্জিন গাড়িকে টানতে না পারলে।
৫. ইঞ্জিনের কম্প্রেশন প্রেসার কমে গেলে।

প্রশ্নঃ ইঞ্জিনের ফায়ারিং অর্ডার বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ ইঞ্জিনের একটি সিলিন্ডারে পাওয়ার স্ট্রোক সংঘটিত হওয়ার পর অন্য কোন কোন সিলিন্ডারে পর পর পাওয়ার স্ট্রোক সংঘটিত হবে তার ক্রমবিন্যাস কে বুঝায়।

প্রশ্নঃ একটি চার সিলিন্ডার বিশিষ্ট পেট্রোল ইঞ্জিনের ফায়ারিং অর্ডার কি? 
উত্তরঃ ১-৩-৪-২ অথবা ১-২-৪-৩

প্রশ্নঃ লুব্রিকেটিং অয়েল কখন পরিবর্তন করতে হয়?
উত্তরঃ  ২৫০০-৩০০০ কিলোমিটার চলার পর।


প্রশ্নঃ লুব অয়েল কোথায় দিতে হয়?
উত্তরঃ ইঞ্জিনের উপরে রকার আর্ম কভারে অবস্থিত পোর্টে ঢালা হয়। ইহা পরে অয়েল পাম্পে গিয়ে জমা হয়।

প্রশ্নঃ অয়েল পাম্পে কি পরিমাণ লুব অয়েল আছে তা কি ভাবে পরীক্ষা করতে হয়?
উত্তরঃ ডিপস্টিক এর মাধ্যমে।

প্রশ্নঃ ইঞ্জিন চালু অবস্থায় ঠান্ডা হয় কিভাবে?
উত্তরঃ কুলিং সিস্টেমের মাধ্যমে ইঞ্জিন ঠান্ডা হয় বা কার্যকরি তাপমাত্রায় বজায় থাকে। এছাড়া লুব্রিকেটিং অয়েল এর মাধ্যমে আংশিক ঠান্ডা হয়।
কুলিং সিস্টেম দুই প্রকার। 
১. ওয়াটার কুলিং সিস্টেম।
২. এয়ার কুলিং সিস্টেম।

ওয়াটার কুলিং সিস্টেমঃ এ পদ্ধতিতে রেডিয়েটরে পানি থাকে। উক্ত পানি রেডিয়েটর থেকে পাম্পের সাহায্যে হোজ পাইপের ভিতর দিয়ে ওয়াটার জ্যাকেটের মাধ্যমে ইঞ্জিন সিলিন্ডারের সংস্পর্শে এসে ইঞ্জিন কে ঠান্ডা করে।

এয়ার কুলিং সিস্টেমঃ এ পদ্ধতিতে বাতাস ইঞ্জিনকে চতুর্দিকে প্রবাহিত হয়ে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা করে।

প্রশ্নঃ ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয় কেন?
উত্তরঃ
১. কুলিং ফ্যান কাজ না করলে।
২. রেডিয়েটরে পানি কম থাকলে।
৩. লুব অয়েল কম থাকলে বা সার্কুলেশন না হলে।
৪. ফ্যান বেল্ট ছিঁড়ে গেলে।
৫. অতিরিক্ত মালামাল বহন করলে। 
৬. অল্প গতিতে বেশি গিয়ার এবং বেশি গতিতে কম গিয়ার দিলে।

প্রশ্নঃ রেডিয়েটর এর কাজ কি?
উত্তরঃ রেডিয়েটরের কাজ পানি ঠান্ডা করা। রেডিয়েটর হতে ঠান্ডা পানি পাম্পের সাহায্যে ওয়াটার জ্যাকেটের মাধ্যমে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশে পৌছে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা করে এবং গরম অবস্থায় পুনরায় রেডিয়েটরে ফিরে আসে। রেডিয়েটরে এই গরম পানি ঠান্ডা হয়ে পুনরায় ইঞ্জিনে যায়।
মোটরযান এর ইঞ্জিন এবং কুলিং ফ্যান এর সামনে রেডিয়েটর এর অবস্থান।


প্রশ্নঃ কুলিং ফ্যানের কাজ কী?
উত্তরঃ রেডিয়েটরের ভিতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত করা এবং গরম পানিকে ঠান্ডা
করা।

প্রশ্নঃ ব্রেক অয়েল কোথায় দিতে হয় এবং কখন দিতে হয়?
উত্তরঃ মাস্টার সিলিন্ডারে ব্যবহারের জন্য একটি নির্ধারিত পট-এ দিতে হয়। প্রতিদিন গাড়ি চালু করার পূর্বে চেক করতে হবে ব্রেক অয়েলের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা। যখন কমে যায় তখন ব্রেক অয়েল দিতে হয়।

প্রশ্নঃ পেট্রোল ইঞ্জিন ও ডিজেল ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ 
১. পেট্রোল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার করা হয় এবং ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।
২. পেট্রোল ইঞ্জিনে কার্বুরেটর থাকে এবং ডিজেল ইঞ্জিনে ইনজেক্টর থাকে। 
৩. পেট্রোল ইঞ্জিনে ডিস্ট্রিবিউটর থাকে এবং ডিজেল ইঞ্জিনে হাই প্রেসার পাম্পের মাধ্যমে কার্য সমাধা করা হয়।
৪. পেট্রোল ইঞ্জিনে অটো সাইকেল কাজ করে এবং ডিজেল ইঞ্জিনে ডিজেল সাইকেল কাজ করে।
৫. পেট্রোল ইঞ্জিনে জ্বালানি খরচ বেশি এবং ডিজেল ইঞ্জিনের জ্বালানি খরচ কম।
৬. পেট্রোল ইঞ্জিনের গতি বেশি শক্তি কম এবং ডিজেল ইঞ্জিনের গতি কম শক্তি বেশি।

প্রশ্নঃ একটি গাড়ির সামনে V8 লিখা আছে এর অর্থ কি? 
উত্তরঃ উক্ত গাড়ির ইঞ্জিন ভি টাইপের এবং সিলিন্ডার সংখ্যা ৮ 

প্রশ্নঃ একটি মোটর গাড়ির সামনে "বামে চালিত" লেখা থাকতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ আমাদের দেশে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী স্টিয়ারিং হুইল গাড়ির ডান পাশে থাকে। অপর দিকে স্টিয়ারিং হুইল বাম পাশে থাকলে তাকে "বামে চালিত" গাড়ি বা যান বলে।

প্রশ্নঃ কোন কোন গাড়ির সামনে কথাটি উল্টোভাবে লিখা থাকে কেন?
উত্তরঃ সামনের গাড়ির চালক তার রিয়ার ভিউ মিররে (লুকিং গ্লাসে) যাতে লিখাটি ঠিক ভাবে বুঝতে পারে।


প্রশ্নঃ গাড়ির সামনে বা পেছনে লাল রং এর ইংরেজি "L" অক্ষরটি বড় আকারে লিখা থাকলে এর দ্বারা কি বুঝায়? 
উত্তরঃ এটি একটি শিক্ষানবিস ড্রাইভার চালিত গাড়ি। এ গাড়ি হতে সাবধান থাকতে হবে।

প্রশ্নঃ ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ সাধারণত ইঞ্জিন হতে গাড়ির পেছনের দুই চাকায় শক্তি সরবরাহ হয়ে থাকে। বিশেষ প্রয়োজনে যে গাড়ির চার চাকায় শক্তি সরবরাহ করা হয় তাকে ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি বলে।

প্রশ্নঃ ১০০ অকটেন বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ যে জ্বালানিতে আইসো অকটেন এর ভাগ শতকরা ১০০ ভাগ এবং নরমাল হেপটেইনের ভাগ (০%) তাকে ১০০ অকটেন বলে।
(সুতরাং, ১০০ অকটেন বলতে উচ্চ দহনোপযোগী জ্বালানী কে বুঝায়)

প্রশ্নঃ পেট্রোলের সহিত কি অনুপাতে অকটেন ব্যবহার করা উচিত?
উত্তরঃ ২ঃ১
অর্থাৎ দুই লিটার পেট্রোলের সহিত এক লিটার অকটেন।

প্রশ্নঃ অকটেন বেশি ব্যবহার করলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ বেশি অকটেন ব্যবহার করলে ইঞ্জিনে বেশি তাপের সৃষ্টি হয়। ফলে অল্প দিনেই সাইলেন্সার ছিদ্র হয়ে যায়।

প্রশ্নঃ অটোমোবাইল বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ অটোমোবাইল বলতে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন কে বুঝায়। যার নিজস্ব শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র বা ইঞ্জিন আছে।

প্রশ্নঃ ব্যবহার বিবেচনা করে মোটরযানকে কয় ভাগে শ্রেণিভেদ করা হয়?
উত্তরঃ ৫ ভাগে। যথাঃ
১. অটোসাইকেল।
২. মোটরসাইকেল বা স্কুটার।
৩. কার
৪. বাস ও ট্রাক
৫. ট্র্যাক্টর

প্রশ্নঃ জ্বালানি ব্যবহারের পার্থক্য ভেদে মোটরযান কত প্রকার?
উত্তরঃ পাঁচ প্রকার। যথাঃ
১. পেট্রোল ভেহিকেল।
২. ডিজেল ভেহিকেল।
৩. গ্যাস ভেহিকেল।
৪. ইলেকট্রিক ভেহকেল।
৫. স্টিম ভেহিকেল।


প্রশ্নঃ ট্রাকশন কি?
উত্তরঃ গাড়ির চাকা রাস্তার মধ্যে ঘর্ষণ কে ট্রাকশন বলে।

প্রশ্নঃ সি.এন.জি (CNG) বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (Compressed Natural Gas)

প্রশ্নঃ অটোসাইকেল ও মোপেড কি? 
উত্তরঃ দুইটি চাকা বিশিষ্ট ছোট আকৃতির যানকে অটোসাইকেল ও মোপেড বলে।
অটোসাইকেল সাধারণত পুরুষদের এবং মোপেড মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্নঃ অটোমোবাইল পাওয়ার ট্রান্সমিশন সিষ্টেমের নামগুলো ধারাবাহিক ভাবে লিখ।
উত্তরঃ
১. ফ্রন্ড হুইল ফ্রন্ড ইঞ্জিন।
২. রিয়ার হুইল রিয়ার ইঞ্জিন।
৩. ফ্রন্ড হুইল রিয়ার ইঞ্জিন।
৪. রিয়ার হুইল ফ্রন্ড ইঞ্জিন।

প্রশ্নঃ মোটরযানে সাধারণত কোন ধরণের ড্রাইভ অধিক হারে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ ফ্রন্ড ইঞ্জিন রিয়ার হুইল ড্রাইভ মোটরযানে অধিক হারে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্নঃ ফ্রন্ট ইঞ্জিন রিয়ার হুইল ড্রাইভ ভেহিকেল বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ যে মোটরযানের সামনে ইঞ্জিনের অবস্থান এবং পিছনের দিকের হুইল কে ড্রাইভ হুইল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাজে ফ্রন্ট ইঞ্জিন রিয়ার হুইল ড্রাইভ ভেহিকেল বলে।
মোটরযানে সাধারণত ফ্রন্ড ইঞ্জিন রিয়ার হুইল ড্রাইভ অধিক হারে ব্যবহৃত হয়। কারণ এই ড্রাইভ বিশিষ্ট মোটরযানে সামনের ও পিছনের চাকাসমূহের মাঝে সমতা ওজন বন্টন ছাড়া ও এটা উত্তম পরিচালন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।

প্রশ্নঃ ফোর হুইল ড্রাইভ (4WD) মোটরযানের সুবিধা কি?
উত্তরঃ ফোর হুইল ড্রাইভ মোটরযানে চার চাকাতেই যান্ত্রিক শক্তি ড্রাইভ শ্যাফটের মাধ্যমে সামনে ও পিছনে সঞ্চালিত হয় এবং এই যান অধিক ক্ষমতা বহন করতে পারে। এজন্য এটাকে প্রতিরক্ষা বিভাগের সামরিক জীপ সমূহে ব্যবহার করা হয়। মোটরযান কাঁদায় আটকে গেলে এ ড্রাইভ অনায়াসে যান কে টেনে তুলতে সক্ষম হয়।

প্রশ্নঃ অটোমোবাইল চেসিস কি?
উত্তরঃ মোটরযানের বডি বাদ দিয়ে যাবতীয় অংশকে চেসিস বলে।
ফ্রেমের সঙ্গে ইঞ্জিন, শক্তি সরবরাহ পদ্ধতি, ব্রেক পদ্ধতি, সাসপেনশন পদ্ধতি ইত্যাদির সম্বনয়ে চেচিস পদ্ধতি।

প্রশ্নঃ চেসিস কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ দুই প্রকার। যথাঃ
১. প্রচলিত চেসিস 
২. বডি একত্রিত চেসিস 

প্রশ্নঃ চেসিসের কোন অংশে ওভার-হ্যাং রাখা হয়?
উত্তরঃ চেসিসের সামনে ও পিছনে ওভার-হ্যাং রাখা হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url